বিভাস সাহার কবিতা


ব্যাকপ্যাকে সাতাশটি শ্রাবণ


আমরা যারা তোমাদের কান্না ভুলতে পারি নি,
দ্যাখো নেমে এসেছি কবরে তোমাদের পাশেই;
ব্যাকপ্যাকে এনেছি শারদ কবিতা
দাঙ্গার আগের অ্যালবাম
আর সাতাশটি শ্রাবণ।

সত্তরের গেরিলা যোদ্ধারা
সুড়ঙ্গ কেটে নদী আনবে এখানে,
 দেখো পায়ে পায়ে আসবে বারো মাসের তেরো পার্বণ
আর চুতিয়া প্রেমিকেরা যাদের বেশ্যা বানিয়েছে
সেই ভুঁইচাঁপার মত ভঙ্গুর দলিত মেয়েরা
নিয়ে আসবে সোনার গোধুলি।

হাতে হাত রেখে আমরা অপেক্ষা করব
পবিত্র লাভ জিহাদিরা নেমে এলে
আমরা জ্বালাবো ভালোবাসার রামধনু
আর রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে গেঁথে দেব
একটা শহীদ স্তম্ভ।

 তল্লাশ

জেহাদ পুলিশ এসে যখন দরজা ধাক্কা দিল
তখন জবার সারা গায়ে পদ্মফুল ;
কারণ কাল সারারাত সে ভেসেছিল অনন্ত দীঘির কালো জলে
যেখানে গোধূলির মত নেমে এসে
শামসুর একটি চাঁদ ডুবিয়ে দিয়েছিল।
তার সরল তর্পণে ছিল খসে পড়া কিছু তারা,
জলতরঙ্গে কেঁপেছিল আগুনের এক নীপবন ।

এসব স্বপ্ন এখন বিধর্মী ও বেআইনী,
বিচারক আদেশ দিলেই
জবার চোখদুটি উপড়ে ফেলা হবে, আর শামসুরের প্রাণ।

কিন্তু শামসুর এখন কোথায়?

যেসব পাখিরা রাধাচূড়ার আকাশ পার হয়ে
শামসুরকে উড়িয়ে আনতো, তাদের ধরা হয়েছে,
কেউ জানে না, সন্ধের পর তারা আত্মঘাতী হবে।

অন্ধকার গারদ গুহায় জবা এখন নজরবন্দী
তার শরীরের ফুলগুলি কেটে নেওয়া হয়েছে একটু আগেই।
জোছনার অভয়ারণ্যে আর কোন বাঘ নেই, হরিণও --
বাতাসে ঝরনার গন্ধ ভেসে এলে 
সে উড়িয়ে দেবে এক হাজার অন্ধ প্রজাপতি।
ঘুমিয়ে পড়ার মুহুর্তে যে দুটি ঠোঁট কপালে নেমে এল
তার ছোঁওয়া জবা চেনে।

একটু পরেই ফায়ারিং স্কোয়াডের শব্দ
কুকুরের চিৎকার ছাপিয়ে গেল





No comments:

Post a Comment

যোগাযোগ ও লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ spartakasmagazine@gmail.com